Skip to main content

বাংলাদেশে সামাজিক নিরাপত্তার জন্য গৃহীত সরকারী কর্মসূচিসmooth আলোচনা কর

মেফতাহুল তম্মীএকাডেমিক গবেষক ও লেখক

ভূমিকা

স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশ সরকার জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিভিন্ন নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে আসছে। সামাজিক নিরাপত্তা হলো এমন একটি রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা যা দেশের দারিদ্র্যপীড়িত, ঝুঁকিপূর্ণ এবং সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তা প্রদান করে। এর মূল লক্ষ্য হলো জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, দারিদ্র্য হ্রাস, বৈষম্য মোকাবেলা এবং আকস্মিক দুর্যোগ বা অর্থনৈতিক সংকট থেকে সুরক্ষা প্রদান করা। বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫(ঘ) অনুচ্ছেদে সামাজিক নিরাপত্তার অধিকারকে রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এরই আলোকে সরকার বিভিন্ন সময়ে দারিদ্র্য বিমোচন ও সামাজিক সুরক্ষার জন্য নানা ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যা "সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী" নামে পরিচিত। এই কর্মসূচিগুলো নগদ অর্থ সহায়তা, খাদ্য সহায়তা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বিশেষ জনগোষ্ঠীকে সহায়তার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়। সময়ের সাথে সাথে এই কর্মসূচিগুলোর আওতা ও পরিধি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং দেশের দারিদ্র্য হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

সামাজিক নিরাপত্তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

বাংলাদেশে সরকারি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলো হলো:

  • দারিদ্র্য বিমোচন: দেশের অতিদরিদ্র এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আয় বৃদ্ধি করে তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণে সহায়তা করা।
  • বৈষম্য হ্রাস: ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে ব্যবধান কমিয়ে আনা এবং অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন করা।
  • ঝুঁকি মোকাবেলা: প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বার্ধক্য, অসুস্থতা, বেকারত্ব এবং অন্যান্য আকস্মিক সংকট মোকাবেলায় জনগণকে সক্ষম করে তোলা।
  • মানব উন্নয়ন: শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টির উন্নতি ঘটিয়ে মানবসম্পদ উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
  • সামাজিক অন্তর্ভুক্তি: প্রতিবন্ধী, বিধবা, বয়স্ক এবং অন্যান্য সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে সমাজের মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করা।
  • আর্থ-সামাজিক ক্ষমতায়ন: বিশেষ করে নারীদের আর্থিক স্বাধীনতা প্রদান এবং পরিবার ও সমাজে তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করা।

এই লক্ষ্যগুলো অর্জনের জন্য সরকার বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মাধ্যমে শতাধিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।

প্রধান প্রধান সরকারী সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি

বাংলাদেশে সামাজিক নিরাপত্তার জন্য গৃহীত সরকারী কর্মসূচিগুলোকে প্রধানত কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন - নগদ সহায়তা কর্মসূচি, খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসূচি, কর্মসংস্থানমূলক কর্মসূচি এবং বিশেষ জনগোষ্ঠীভিত্তিক কর্মসূচি। নিম্নে এই কর্মসূচিগুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

নগদ সহায়তা কর্মসূচি (Cash Transfer Programs)

এই কর্মসূচির আওতায় সরকার সরাসরি উপকারভোগীদের ব্যাংক বা মোবাইল অ্যাকাউন্টে নগদ অর্থ প্রেরণ করে। এটি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং কার্যকর একটি পদ্ধতি।

১. বয়স্ক ভাতা কর্মসূচি: দেশের প্রবীণ, দুস্থ ও স্বল্প উপার্জনক্ষম অথবা উপার্জনে অক্ষম জনগোষ্ঠীর সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে এই কর্মসূচি প্রবর্তন করা হয়। প্রাথমিকভাবে প্রতি মাসে ১০০ টাকা হারে এই ভাতা প্রদান শুরু হলেও বর্তমানে এর পরিমাণ ও আওতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এই কর্মসূচির আওতায় ৬১ লক্ষ উপকারভোগীকে মাসিক ৬৫০ টাকা হারে ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হলো বয়স্ক জনগোষ্ঠীর আর্থিক সুরক্ষা প্রদান, পরিবার ও সমাজে তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি এবং চিকিৎসা ও পুষ্টির চাহিদা পূরণে সহায়তা করা।

২. বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতা: বিধবা এবং স্বামী পরিত্যক্তা দুঃস্থ নারীদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য ১৯৯৮-৯৯ সালে এই কর্মসূচি চালু করা হয়। এর লক্ষ্য হলো এই নারীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তা বিধান এবং পরিবারে তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করা। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এই কর্মসূচির আওতায় ২৯ লক্ষ নারীকে মাসিক ৬৫০ টাকা হারে ভাতা প্রদান করা হচ্ছে।

৩. অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা: দেশের প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর অধিকার সুরক্ষা ও তাদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০০৫-০৬ অর্থবছর থেকে "অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা" কর্মসূচি চালু করা হয়। এর উদ্দেশ্য হলো প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং তাদের সামাজিক নিরাপত্তা প্রদান করা। বর্তমানে এই কর্মসূচির আওতায় মাসিক ভাতার পরিমাণ বৃদ্ধি করে ৯০০ টাকা করা হয়েছে এবং প্রায় ৩৪.৫০ লক্ষ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এর সুবিধা পাচ্ছেন।

৪. মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা: দেশের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা ও তাদের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সরকার এই ভাতা প্রদান করে থাকে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার প্রাথমিকভাবে ৩০০ টাকা হারে দুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য এই ভাতা চালু করলেও পরবর্তীতে সকল মুক্তিযোদ্ধার জন্য এটি "সম্মানী ভাতা" হিসেবে প্রবর্তিত হয়। বর্তমানে প্রায় দুই লক্ষাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসিক ২০ হাজার টাকা হারে এই সম্মানী ভাতা পাচ্ছেন এবং সরকার এটি ৩০ হাজার টাকায় উন্নীত করার পরিকল্পনা করছে।

খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসূচি

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে থাকে।

১. ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং (VGF): দুর্যোগকালীন এবং উৎসবের সময়ে (যেমন - ঈদ) অতিদরিদ্র পরিবারগুলোকে খাদ্য সহায়তা প্রদানের জন্য এই কর্মসূচি পরিচালিত হয়। এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট পরিমাণ চাল বা অন্যান্য খাদ্যশস্য বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়।

২. ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (VWB): পূর্বে এই কর্মসূচি ভিজিডি (VGD) নামে পরিচিত ছিল। এর আওতায় গ্রামীণ দুঃস্থ ও অসহায় নারীদের প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হয় এবং তাদের সঞ্চয় ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করে তোলা হয়।

৩. খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি: এই কর্মসূচির আওতায় দেশের ৫০ লক্ষ হতদরিদ্র পরিবারকে প্রতি কেজি ১০ টাকা দরে মাসে ৩০ কেজি চাল প্রদান করা হয়। বছরের কর্মহীন মাসগুলোতে (মার্চ-এপ্রিল এবং সেপ্টেম্বর-অক্টোবর-নভেম্বর) এই সহায়তা দেওয়া হয়।

৪. খোলা বাজারে বিক্রয় (OMS): চাল ও আটার দাম স্থিতিশীল রাখতে সরকার খোলা বাজারে ভর্তুকি মূল্যে খাদ্যশস্য বিক্রয় করে। এর মাধ্যমে নিম্ন আয়ের মানুষ কম দামে চাল ও আটা কিনতে পারে।

কর্মসংস্থানমূলক কর্মসূচি

দারিদ্র্য বিমোচনের একটি টেকসই উপায় হলো কর্মসংস্থান সৃষ্টি। সরকার গ্রামীণ কর্মহীন জনগোষ্ঠীর জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।

১. অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি (EGPP): এই কর্মসূচির আওতায় বছরের কর্মহীন সময়ে (সাধারণত নভেম্বর-ডিসেম্বর এবং মার্চ-এপ্রিল) গ্রামের অতিদরিদ্র নারী-পুরুষদের জন্য স্বল্পমেয়াদী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়। তারা গ্রামীণ রাস্তাঘাট নির্মাণ, খাল খনন, পুকুর পুনঃখনন ইত্যাদি উন্নয়নমূলক কাজে অংশ নিয়ে দৈনিক ভিত্তিতে মজুরি পেয়ে থাকেন।

২. গ্রামীণ রক্ষণাবেক্ষণ (RMP): এই কর্মসূচির মাধ্যমে গ্রামের দুঃস্থ ও বিধবা নারীদের দ্বারা গ্রামীণ মাটির রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করানো হয়, যার বিনিময়ে তারা মাসিক বেতন পান।

বিশেষ জনগোষ্ঠী ও অন্যান্য কর্মসূচি

উপরোক্ত কর্মসূচিগুলো ছাড়াও সরকার বিভিন্ন বিশেষায়িত জনগোষ্ঠীর জন্য নানা ধরনের নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি পরিচালনা করে।

১. প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি: প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করার জন্য প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরে উপবৃত্তি প্রদান করা হয়।

২. হিজড়া, বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি: সমাজের অনগ্রসর হিজড়া, বেদে এবং অন্যান্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ ভাতা, প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষা উপবৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

৩. চা-শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন: চা-বাগানের শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে তাদের সন্তানদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তিসহ বিভিন্ন আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।

৪. মাতৃত্বকালীন ভাতা ও শিশু সহায়তা: দরিদ্র গর্ভবতী মায়েদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে এবং শিশুর বিকাশে সহায়তা করার জন্য "মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচি" চালু করা হয়েছে। এর আওতায় গর্ভকালীন সময় থেকে শুরু করে শিশুর নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত মায়েদের নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়।

উপসংহার

বাংলাদেশে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিগুলো দেশের দারিদ্র্য ও বৈষম্য হ্রাসে এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা এবং মুক্তিযোদ্ধা সম্মানীর মতো নগদ সহায়তা কর্মসূচিগুলো সরাসরি মানুষের হাতে অর্থ পৌঁছে দিয়ে তাদের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি করছে। পাশাপাশি, খাদ্য নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থানমূলক কর্মসূচিগুলো জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ ও তাদের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনয়নে সহায়ক হচ্ছে। যদিও উপকারভোগী নির্বাচন ও বিতরণে স্বচ্ছতার অভাব এবং ভাতার পরিমাণ অপর্যাপ্ত হওয়াসহ কিছু চ্যালেঞ্জ এখনও বিদ্যমান, তথাপি সরকার এই কর্মসূচিগুলোর পরিধি ও কার্যকারিতা বাড়াতে সচেষ্ট। জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল (NSSS) প্রণয়নের মাধ্যমে একটি সমন্বিত ও কার্যকর সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চলমান রয়েছে। এই কর্মসূচিগুলোর সফল বাস্তবায়ন দেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDG) অর্জনেও সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট

একই বিষয়ের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কনটেন্ট

বাংলাদেশের দারিদ্র বিমোচনে গৃহীত সরকারী কর্মসূচিসমূহ আলোচনা কর।

বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচনে গৃহীত বিভিন্ন সরকারী কর্মসূচির বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ক্ষুদ্রঋণ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে সরকার কীভাবে দারিদ্র্য মোকাবেলায় কাজ করছে, তার একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র এখানে তুলে ধরা হয়েছে।

পড়ুন

সরকারী ও বেসরকারী অর্থব্যবাড়ার মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা কর।

সরকারী ও বেসরকারী অর্থব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য ও সাদৃশ্য বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। এই আলোচনায় উদ্দেশ্য, আয়ের উৎস, ব্যয়ের প্রকৃতি, বাজেট প্রণয়ন, এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার মতো মূল বিষয়গুলির উপর আলোকপাত করা হয়েছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক অর্থনীতির শিক্ষার্থীদের জন্য এই তুলনামূলক বিশ্লেষণটি বিশেষভাবে উপযোগী, কারণ এটি রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক কার্যাবলী এবং ব্যক্তিগত খাতের অর্থনৈতিক আচরণের মধ্যে মৌলিক তফাৎগুলো তুলে ধরে।

পড়ুন