Skip to main content

বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন আলোচনা কর

মেফতাহুল তম্মীএকাডেমিক গবেষক ও লেখক

ভূমিকা

বিগত দশকগুলোতে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনে যে কয়েকটি খাত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, তার মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি (Information Technology - IT) খাত অন্যতম। সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্পের আওতায় গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ এবং বেসরকারি খাতের সক্রিয় অংশগ্রহণে এই খাতটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি প্রধান চালিকাশক্তিতে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে চাকরির বাজার তৈরি, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন, স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং নাগরিক সেবা সহজীকরণে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অবদান অনস্বীকার্য।

১৯৮০-এর দশকে কম্পিউটার প্রযুক্তির সীমিত ব্যবহারের মাধ্যমে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, তা আজ সফটওয়্যার শিল্প, বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (BPO), ই-কমার্স, ফ্রিল্যান্সিং এবং আইটি-সক্ষম পরিষেবা (ITES) এর মতো বিস্তৃত ক্ষেত্রে প্রসারিত হয়েছে। এই খাতের উন্নয়ন কেবল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকেই ত্বরান্বিত করেনি, বরং শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি এবং প্রশাসনিক ক্ষেত্রেও বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। তাই বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সামগ্রিক উন্নয়ন, এর সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জগুলো বোঝা অত্যন্ত জরুরি।

বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিকাশের প্রেক্ষাপট

বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়, বরং এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার ফল। এর ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল কয়েক দশক আগে, যা সময়ের সাথে সাথে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের মাধ্যমে শক্তিশালী হয়েছে।

১. প্রারম্ভিক পর্যায় (১৯৮০-২০০০)

১৯৮০-এর দশকে বাংলাদেশে কম্পিউটারের ব্যবহার শুরু হয় মূলত ব্যক্তিগত এবং কিছু প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে। তবে ১৯৯০-এর দশকে জাতীয় তথ্যপ্রযুক্তি নীতি প্রবর্তনের পর এই খাতের উন্নয়নের একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপরেখা তৈরি হয়। এই সময়ে সীমিত আকারে সফটওয়্যার তৈরি এবং ডেটা এন্ট্রি-এর মতো কাজ শুরু হলেও অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে এর প্রসার ছিল ধীরগতির।

২. ভিত্তি স্থাপন এবং বিকাশ (২০০১-২০০৮)

একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে সাবমেরিন ক্যাবলের সাথে বাংলাদেশের সংযোগ স্থাপন একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ ছিল। এটি দ্রুতগতির ও সাশ্রয়ী ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করে, যা তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিকাশের মূল ভিত্তি স্থাপন করে। এই সময়ে আউটসোর্সিং এবং সফটওয়্যার রপ্তানির সম্ভাবনা তৈরি হতে শুরু করে এবং বেশ কিছু দেশীয় কোম্পানি আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করার চেষ্টা করে।

৩. ডিজিটাল বাংলাদেশ ও দ্রুত প্রসার (২০০৯-বর্তমান)

২০০৮ সালের নির্বাচনে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্প ঘোষণার পর তথ্যপ্রযুক্তি খাত अभূতপূর্ব গতি লাভ করে। এই কর্মসূচির আওতায় সরকার দেশব্যাপী ইন্টারনেট সংযোগ সম্প্রসারণ, ই-গভর্নেন্স প্রতিষ্ঠা, আইটি পার্ক নির্মাণ এবং দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির মতো বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এর ফলে ফ্রিল্যান্সিং, ই-কমার্স, মোবাইল ব্যাংকিং এবং সফটওয়্যার শিল্পের ব্যাপক প্রসার ঘটে। বর্তমানে এই খাতটি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১’ রূপকল্পের একটি প্রধান ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে গৃহীত পদক্ষেপসমূহ

বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের আজকের অবস্থানের পেছনে সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বিত প্রচেষ্টা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। কিছু উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিচে তুলে ধরা হলো:

১. অবকাঠামোগত উন্নয়ন

  • হাই-টেক পার্ক স্থাপন: সরকার দেশব্যাপী ২৮টির বেশি হাই-টেক বা আইটি পার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি এবং যশোরে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক ইতোমধ্যে চালু হয়েছে, যেখানে দেশি-বিদেশি অনেক কোম্পানি তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
  • ইন্টারনেট সংযোগ সম্প্রসারণ: ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ফাইবার অপটিক ক্যাবল সম্প্রসারণ এবং মোবাইল নেটওয়ার্কের (3G, 4G এবং সম্প্রতি 5G) বিস্তার ঘটানো হয়েছে। এর ফলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও প্রযুক্তির সুফল পৌঁছে যাচ্ছে।
  • জাতীয় ডেটা সেন্টার: জাতীয় তথ্য সংরক্ষণের জন্য ফোর টিয়ার (Tier-IV) জাতীয় ডেটা সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে, যা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ডেটা সেন্টারগুলোর একটি।

২. নীতিগত সহায়তা ও প্রণোদনা

  • কর অব্যাহতি: তথ্যপ্রযুক্তি খাতের আয়কে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কর অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে, যা নতুন উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করছে।
  • স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড: সম্ভাবনাময় নতুন উদ্যোগ বা স্টার্টআপগুলোকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য সরকার "স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড" নামে একটি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি গঠন করেছে।
  • ডিজিটাল আইন ও নীতিমালা: সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং ডিজিটাল লেনদেনের আইনি ভিত্তি দিতে বিভিন্ন আইন ও নীতিমালা, যেমন - সাইবার নিরাপত্তা আইন, ডেটা সুরক্ষা আইন ইত্যাদি প্রণয়ন করা হয়েছে।

৩. মানবসম্পদ উন্নয়ন

  • প্রশিক্ষণ কর্মসূচি: সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে হাজার হাজার তরুণ-তরুণীকে ফ্রিল্যান্সিং, প্রোগ্রামিং, গ্রাফিক ডিজাইন এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।
  • শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব: দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি শিক্ষায় শিক্ষিত করতে "শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব" স্থাপন করা হয়েছে।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অবদান

তথ্যপ্রযুক্তি খাত বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বহুমাত্রিক অবদান রাখছে, যা কেবল জিডিপি প্রবৃদ্ধিতেই সীমাবদ্ধ নয়।

১. বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন

সফটওয়্যার রপ্তানি এবং ফ্রিল্যান্সিং এই খাতের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান দুটি উৎস। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)-এর তথ্যমতে, বর্তমানে সফটওয়্যার ও আইটি সেবা রপ্তানি থেকে দেশের আয় প্রায় ১.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এছাড়া, দেশের প্রায় ৮ লক্ষাধিক ফ্রিল্যান্সার অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ করে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনছেন, যা দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহকে শক্তিশালী করছে।

২. কর্মসংস্থান সৃষ্টি

তথ্যপ্রযুক্তি খাত, বিশেষ করে সফটওয়্যার শিল্প, কল সেন্টার, গ্রাফিক ডিজাইন এবং ফ্রিল্যান্সিং, দেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করেছে। বেসিসের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে এই খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ২০ লক্ষাধিক মানুষ কর্মরত আছেন। সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে এই খাতে ৩০ লক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

৩. জিডিপিতে অবদান

দেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অবদান ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে এই খাতের অবদান জিডিপির প্রায় ১.২৮ শতাংশ। সরকারের লক্ষ্য ২০২৫ সালের মধ্যে আইসিটি রপ্তানি আয় ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা, যা জিডিপিতে আরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

৪. ডিজিটাল অর্থনীতির প্রসার

মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (MFS), ই-কমার্স এবং অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেমের প্রসারের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরে একটি শক্তিশালী ডিজিটাল অর্থনীতি গড়ে উঠেছে। এটি একদিকে যেমন গ্রামীণ অর্থনীতিকে মূলধারার সঙ্গে সংযুক্ত করেছে, তেমনি ব্যবসা-বাণিজ্যে স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা এনেছে।

তথ্যপ্রযুক্তি খাতের চ্যালেঞ্জসমূহ

অসামান্য সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

  • দক্ষ মানবসম্পদের অভাব: প্রযুক্তির দ্রুত পরিবর্তনের সাথে তাল মেলানোর মতো যথেষ্ট দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা এবং শিল্পের চাহিদার মধ্যে একটি বড় ব্যবধান বিদ্যমান।
  • অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা: শহর ও গ্রামের মধ্যে ডিজিটাল বৈষম্য এখনো প্রকট। দেশের অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে উচ্চগতির ও নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা এখনো সহজলভ্য নয়।
  • সাইবার নিরাপত্তার ঝুঁকি: ডিজিটাল লেনদেন ও ডেটার পরিমাণ বাড়ার সাথে সাথে সাইবার আক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ছে। শক্তিশালী সাইবার নিরাপত্তা অবকাঠামো এবং সচেতনতার অভাব একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
  • বিনিয়োগের স্বল্পতা: ঝুঁকিপূর্ণ নতুন উদ্যোগে (Venture Capital) বিনিয়োগের পরিমাণ এখনো সীমিত, যা উদ্ভাবনী স্টার্টআপগুলোর বিকাশে একটি বড় বাধা।
  • আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডিং-এর অভাব: বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশকে এখনো একটি শক্তিশালী আইসিটি গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি। এর ফলে অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের সক্ষমতা সম্পর্কে অবগত নয়।

তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১’ রূপকল্প এই খাতের উন্নয়নে নতুন দিকনির্দেশনা প্রদান করেছে। এর চারটি মূল ভিত্তি হলো— স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার এবং স্মার্ট সমাজ, যার প্রতিটিই প্রযুক্তিনির্ভর।

ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), ইন্টারনেট অফ থিংস (IoT), ব্লকচেইন, বিগ ডেটা এবং রোবটিকসের মতো অগ্রসর প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে। এসব প্রযুক্তি কৃষি, স্বাস্থ্যসেবা, নগর পরিচালন এবং শিল্প উৎপাদনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। সরকারের লক্ষ্য হলো ২০৪১ সালের মধ্যে একটি জ্ঞানভিত্তিক, উদ্ভাবনী ও উচ্চ আয়ের অর্থনীতি গঠন করা, যেখানে তথ্যপ্রযুক্তি খাত কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করবে।

উপসংহার

পরিশেষে বলা যায়, বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত একটি সম্ভাবনাময় ও দ্রুত বর্ধনশীল ক্ষেত্র হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছে। গত এক দশকে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্পের অধীনে যে ভিত্তি তৈরি হয়েছে, তা দেশকে পরবর্তী ধাপে অর্থাৎ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ হিসেবে গড়ে তোলার পথ সুগম করেছে। যদিও অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা, দক্ষ জনবলের ঘাটতি এবং সাইবার নিরাপত্তার মতো চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান, তবে সরকারি নীতিগত সহায়তা, বেসরকারি খাতের উদ্যোগ এবং তরুণ প্রজন্মের উদ্ভাবনী শক্তির মাধ্যমে এই বাধাগুলো অতিক্রম করা সম্ভব। সঠিকভাবে পরিকল্পনা ও বিনিয়োগ করা হলে এই খাতটিই হতে পারে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি এবং বিশ্বমঞ্চে একটি জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করার প্রধান হাতিয়ার।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট

একই বিষয়ের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কনটেন্ট

জনসংখ্যা কীভাবে পরিবেশ দূষণ সৃষ্টি করে আলোচনা কর।

জনসংখ্যা বৃদ্ধি পরিবেশ দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ। অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতে প্রাকৃতিক সম্পদের উপর চাপ বাড়ে, যার ফলে বায়ু, পানি ও মাটি দূষিত হয়। এই আলোচনায় জনসংখ্যা বৃদ্ধি কীভাবে নগরায়ন, শিল্পায়ন, বনভূমি উজাড় এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিবেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দূষণ সৃষ্টি করে, বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তার বিশদ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি পরিবেশ দূষণের প্রভাব ও তা নিয়ন্ত্রণের উপায় সম্পর্কেও আলোকপাত করা হয়েছে।

পড়ুন

জীববৈচিত্র সংরক্ষণে বাংলাদেশের ভূমিকা আলোচনা কর।

বাংলাদেশের সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা, আইন প্রণয়ন, সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা এবং আন্তর্জাতিক সনদের আলোকে জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বাংলাদেশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ, যেমন জাতীয় জীববৈচিত্র্য কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, সুন্দরবনসহ বিভিন্ন প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ব্যবস্থাপনা এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি দেশের জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তবে জলবায়ু পরিবর্তন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং দূষণের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।

পড়ুন